নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বাবুগঞ্জে জমির মালিক এক কৃষক পরিবারকে দু’দফায় মারপিট ও ভয়ভীতি দেখিয়ে উচ্ছেদ করে তাদের বসতঘর দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী গ্রুপ। এ ঘটনায় থানা ও আদালতে মামলা দায়ের করা হলে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের সাড়ে পাঁচআনি গ্রামে ঘটেছে এ ঘটনা। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর মৌজার এসএ ১৯১ এবং বিএস ১৩২ নম্বর খতিয়ানের এসএ ২০০ ও ২০১ নং দাগের ২০ শতাংশ জমি বিগত ২০১২ সালের ২৮ মে সাফ কবলা দলিলমূলে মুলাদীর কাজিরচর গ্রামের জসিম প্যাদার কাছে বিক্রি করেন স্থানীয় সাড়ে পাঁচআনি গ্রামের কৃষক খালেক খন্দকার। জসিম প্যাদা সাফ কবলা দলিল করে ওই জমির দখল বুঝে নেন এবং সেখানে গাছপালা রোপণসহ একটি বসতঘর নির্মাণ করেন। ওই বসতঘরে তিনি তার বোন মাসুদা বেগম এবং ভগ্নিপতি ইউনুস হাওলাদারকে থাকতে দেন।
এদিকে ওই জমির দিকে লোলুপ দৃষ্টি পড়ে রশিদ হাওলাদার ও মাইনুদ্দিন গংদের। ভুক্তভোগী জসিম প্যাদা জানান, ওই জমি কেনা ও দখলস্বত্ত্ব বুঝে নেওয়ার সময় চুপ থাকলেও গত প্রায় একবছর ধরে সম্পত্তি থেকে তাদের উচ্ছেদের জন্য বিভিন্নভাবে হয়রানি, মারপিট ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন স্থানীয় প্রভাবশালী জাকির সরদার, রশিদ হাওলাদার, মাইনুদ্দিন, মনির, বজলু, সিরাজুল, রিপন এবং তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা। গত ২৮ মে এবং ২ নভেম্বর এসব সন্ত্রাসীরা তার পরিবারের সদস্যদের ওপর দু’দফায় হামলা চালিয়েছে।
জসিম প্যাদা আরও বলেন, রশিদ হাওলাদার ও মাইনুদ্দিনের নেতৃত্বে তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দুই দফায় বসতঘরে হামলা ও বেধড়ক মারপিটে আমার স্ত্রী হিরা বেগম (৪৫), কলেজপড়ুয়া মেয়ে সাবিহা আক্তার (২২), আমার বোন মাসুদা বেগম (৪৫) এবং ভাগ্নে পলাশ হাওলাদার (২০) গুরুতর আহত হয়ে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরপর দুইবার এ ঘটনায় আমি থানায় এবং আদালতে অভিযোগ দায়ের করলে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। বর্তমানে তারা আমার বসতঘরে আগুন দিয়ে আমাকে সপরিবারে পুড়িয়ে মারার হুমকি দিচ্ছে বলে জানান ভুক্তভোগী জসিম প্যাদা।
এসব অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় সাড়ে পাঁচআনি গ্রামের প্রবীণ কৃষক আবদুল খালেক খন্দকার বলেন, জসিম প্যাদা ও তার পরিবারকে তাদের ক্রয়কৃত জমি থেকে উচ্ছেদের জন্য বারবার হামলা চালাচ্ছেন প্রভাবশালী রশিদ হাওলাদার, মাইনুদ্দিন ও জাকির সরদারের গ্রুপ। গ্রামের প্রায় সবাই এ ঘটনা সম্পর্কে অবগত আছে। এদিকে অভিযোগ প্রসঙ্গে রশিদ হাওলাদার ও মাইনুদ্দিনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত জাকির সরদার ওই জমি ওয়ারিশদের বলে দাবি করলেও তার দাবির স্বপক্ষে কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। বাবুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান জানান, জসিম প্যাদার প্রতিপক্ষরা জোরপূর্বক ওই জমি দখলের চেষ্টা করছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে একাধিকবার সেখানে দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে। বিরোধীয় ওই ২০ শতাংশ জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। আদালতের নির্দেশ ছাড়া সম্পত্তি কেউ জবরদখল কিংবা সেখানে শান্তিশৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply